পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেনাপ্রধান (হত্যাকান্ডের সময় বিজিবি প্রধান) জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলার করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি নথিভুক্তের আদেশ দেন।
২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকান্ডে কারা অভ্যন্তরে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস(বিডিআর)এর সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) আব্দুর রহিমের মৃত্যুর ঘটনায় এ মামলা করা হয়।
আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আক্তারুজ্জামানের আদালতে ভুক্তভোগী ডিএডি আব্দুর রহিমের ছেলে এডভোকেট আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলার বাদী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘পিলখানা হত্যাকান্ডে কারা অভ্যন্তরে বিডিআরের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) আব্দুর রহিমের মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেনাপ্রধান (হত্যাকান্ডের সময় বিজিবি প্রধান) জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’
তিনি জানান,২০১০ সালে বিডিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় যে অপমৃত্যুর মামলাটি হয়েছে তা রিকল করেছেন। অপমৃত্যুর মামলার সর্বশেষ অবস্থা দেখে আদালত এ মামলার আদেশ দেবেন। বর্তমান সরকারের সময় পিলখানা হত্যাকান্ড নিয়ে প্রথম মামলা হতে যাচ্ছে এটি। এ মামলায় জেনারেল আজিজ আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় আসামি হলেন, বিডিআর বিদ্রোহের মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল, আসামির তালিকায় শেখ হাসিনা রয়েছেন চতুর্থ স্থানে। বাকি আসামিরা হলেন, সাবেক কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুল ইসলাম খাঁন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক এমপি নূরে আলম চৌধুরী লিটন, শেখ সেলিম ও শেখ হেলাল, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাবেক এমপি ও আওয়ামীলীগ নেতা মির্জা আজম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, কেন্দ্রীয় কারাগারের তৎকালীন জেল সুপার, ডাক্তার রফিকুল ইসলামসহ অন্য ডাক্তারগন। এছাড়াও হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত মন্ত্রী এমপিসহ অজ্ঞাত আরও ২শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ফ্যাসিস্ট স্বৈরশাসক হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিনত করার লক্ষ্যে তাদের বিদেশী এজেন্টের মাধ্যমে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ রাইফেলসের মেধাবী অফিসারদের হত্যা করে। ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারী পিলখানা হত্যাকান্ডে ৫৭ জন সেনা অফিসারসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকান্ডের রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য ভুক্তোভোগীকে বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাব দেয়া হচ্ছিল। তবে তিনি অন্যায় ও মিথ্যা রাজসাক্ষী দিতে চাননি। তাই বাদীর পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডিএডি আব্দুর রহিমকে ২০১০ সালের ২৯ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় করাগারে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। পরে কারাগারে ডাক্তাররা স্ট্রোক করে মারা গেছে বলে সার্টিফিকেট দেয়। আব্দুর রহিমের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে এ মামলা করা হয়।